মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহের বর্ণনা
- আপডেট সময় : 05:10:45 pm, Wednesday, 5 October 2022 45 বার পড়া হয়েছে
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহের বর্ণনা-বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সঠিকভাবে পরিচালনা ও বেগবান করার পুরো বাংলাদেশকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। প্রত্যেক ভাগকে বলা হয় এক একটা সেক্টর। এতে দেশকে মোট ১১ টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। আজ এই ১১ টি সেক্টর ও কোন কোন জায়গা নিয়ে এই সেক্টরগুলো গঠিত, সেক্টর কমান্ডার ও সেক্টরের বীরশ্রেষ্ঠদের নিয়ে বিস্তারিত জানব।
১. নং সেক্টরঃ
এই সেক্টরের মধ্যে অবস্থিত স্থান গুলো হলো পার্বত্য চট্টগ্রাম, চচট্টগ্রাম ও ফেনী ( ফেনী নদী পর্যন্ত)।
১ নং সেক্টরের কমান্ডারঃ ১৯৭১ সালের জুন মাস পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান। তারপর দায়িত্ব গ্রহণ করেন ক্যাপ্টেন ( পরে মেজর) মোহাম্মদ রফিক।
এই সেক্টরের একজন বীরশ্রেষ্ঠঃ
ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ
জন্মঃ ১৯৪৩ সালের ১ মে। ফরিদপুর জেলার বোয়ালিমারী থানার সালামতপুর গ্রামে।
কর্মস্থলঃ ই পি আর।
পদবিঃ ল্যান্স নায়েক।
মৃত্যুঃ ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল।
সমাধিস্থলঃ চট্টগ্রামের কালুরঘাটের চিংড়িখালী নদীর তীরে।
২ নং সেক্টরঃ
এই সেক্টরের অঞ্চলগুলো হলো ঢাকা জেলার ঢাকা, নোয়াখালী জেলা, কুমিল্লা জেলা ও ফরিদপুর জেলার কিছু অংশ।
সেক্টর কমান্ডারঃ ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মেজর খালেদ মোশাররফ, পরে এই দায়িত্ব পান মেজর এ টি এম হায়দার।
৩ নং সেক্টরঃ
আখাউড়া- ভৈরব রেলনাইল থেকে পূর্ব দিকে কুমিল্লা জেলা, সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমা অঞ্চলগুলা ছিলা এই সেক্টরের মধ্যে।
কমান্ডারঃ মেজর কে এম শফিউল্লাহ ছিলেন এ সেক্টরের কমান্ডার, পরে মেজর এ. এম. এন নুরুজ্জামান এ সেক্টরের কম্নডার হিসাবে নিযুক্ত হন।
৪ নং সেক্টরঃ
সিলেট জেলার পূর্বাঞ্চল, খোয়াইল, শায়েস্তাগঞ্জ রেলনাইল থেকে পূর্ব উত্তর দিকে সিলেট – ডাউকি সড়ক পর্যন্ত।
কমান্ডারঃ এই সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর সি আর দত্ত। তিনি ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাস থেকে ১৬ ই ডিসেম্বর পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন।
বীরশ্রেষ্ঠঃ
সিপাহি হামিদুর রহমান
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহের বর্ণনা
জন্মঃ ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩ সালে। ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানার খালিশপুর গ্রামে।
কর্মস্থলঃ সেনাবাহিনী।
যোগদানঃ ১৯৭০ সালে।
পদবিঃ সিপাহি।
মৃত্যুঃ ২৮ অক্টোবর, ১৯৭১ সালে।
সমাধিস্থলঃ ভারতের আমবাসা নামক স্থানে ছিল৷ । বর্তমানে বাংলাদেশের মিরপুর বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে।
যেভাবে শহীদ হনঃ ১৯৭০ সালের ২ অক্টোবর সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। পাকহানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে শাহাদাত বরণ করেন।
৫ নং সেক্টরঃ
সিলেট জেলার পশ্চিমাঞ্চল, সিলেট – ডাউকি সড়ক থেকে সুনামগঞ্জ – মময়মনসিংহ জেলার সিমান্ত পর্যন্ত।
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহের বর্ণনা
কমান্ডারঃ মেজর মীর শওকত আলী।
৬ নং সেক্টরঃ
রংপুর জেলা, দক্ষিণ দিনাজপুরের ঠাকুরগাঁও মহকুমা পর্যন্ত ( পরে রংপুর জেলার ব্রাহ্মপুত্র নদের তীরের অঞ্চল ১১ নং সেক্টরের অধীনে আনা হয়)
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহের বর্ণনা
কমান্ডারঃ সেক্টর কমান্ডার ছিলেন ইউং কমান্ডার এম কে বাশার।
৭ নং সেক্টরঃ
দিনাজপুর জেলার দক্ষিণাঞ্চল, রাজশাহী, পাবনা ও বগুড়া।
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহের বর্ণনা
কমান্ডারঃ মেজর কাজী নুরুজ্জামান।
বীরশ্রেষ্ঠঃ
ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর
জন্মঃ ১৯৪৯ সালে। বরিশাল জেলায়।
কর্মস্থলএ যোগদানঃ ১৯৬৭ সালে।
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহের বর্ণনা
পদবিঃ ক্যাপ্টেন।
মৃত্যুঃ ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে।
সমাধিস্থলঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ প্রাঙ্গনে।
৮ নং সেক্টরঃ
কুষ্টিয়া, যশোর, ফরিদপুরের অধিকাংশ, খুলনা জেলার দৌলতপুর, সাতক্ষীরা সড়ক পর্যন্ত।
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহের বর্ণনা
কমান্ডারঃ প্রথমে কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মেজর আবু ওসমান। তিনি আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। পরে মেজর এম এ মঞ্জরের উপর এর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এই সেক্টরের দুইজন বীরশ্রেষ্ঠঃ
১. সিপাহি মোস্তফা কামাল
জন্মঃ ১৯৪৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর। ভোলা জেলার পশ্চিম হাজিপুর থানার দৌলত গ্রামে।
কর্মস্থলঃ সেনাবাহিনী।
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহের বর্ণনা
পদবিঃ সিপাহি।
মৃত্যুঃ ১৯৭১ সালের ৮ ই এপ্রিল।
সমাধিস্থলঃ ব্রাক্ষণবাড়িয়া আখাউড়ার দরুইন গ্রামে।
২. ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ
জন্মঃ ২৬ এপ্রিল ১৯৩৬ সালে। নরাইল জেলার মহেষখোলা গ্রামে।
কর্মস্থলঃ ই পি আর।
যোগদান করেন: ১৯৫৯ সালে।
পদবিঃ ল্যান্স নায়েক।
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহের বর্ণনা
মৃত্যুঃ ৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ সালে।
সমাধিস্থলঃ যোশরের গোয়ালহাটি নামক স্থানে।
৯ নং সেক্টরঃ
দৌলতপুর – সাতক্ষীরা সড়ক থেকে খুলনা জেলার দক্ষিণাঞ্চল, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা।
কমান্ডারঃ মেজর এম এ জলিল। তিনি ডিসেম্বর মাসের শুরু পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু শেষ কয়দিন মেজর জয়লান আবেদীনকে এ সেক্টরের কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।
১০ নং সেক্টরঃ
নো- কমান্ড সমুদ্র উপকূল অঞ্চল, অভ্যরীণ নৌ পথ।
এই সেক্টরের কোন নিজস্ব কমান্ডার নেই। তারা যে অঞ্চলে মিশন করে সেই সেই অঞ্চলের সেক্টর কমান্ডারের নির্দেশ মেনে কাজ করে।
বীরশ্রেষ্ঠঃ
লিডার রুহুল আমিন
জন্মঃ ১৮৩৪ সালে। নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানায়।
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহের বর্ণনা
কর্মস্থলঃ নৌ- বাহিনী।
পদবিঃ ইঞ্জিনিয়ার।
মৃত্যুঃ ১০ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে।
সমাধিস্থলঃ খুলনার রুপসা নদীর তীরে কবর দেওয়া হয়।
১১ নং সেক্টরঃ
কিশোরগঞ্জ মহকুমা বাদে ময়মনসিংহ জেলা ও টাংগাইল জেলা।
কমান্ডারঃ মেজর আবু তাহের। নভেম্বর মাসে তিনি আহত হলে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট এম হামিদুল্লাকে এখানকার সেক্টর কমান্ডার বানানো হয়
See Naw More>>>